ইউটিউবে ভিডিও ভাইরাল করার উপায়

বর্তমানে ভিডিও শেয়ারিং এর সবথেকে জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে ইউটিউব । ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে শুরু হয় এই ইউটিউব এর যাত্রা ।  এটি গুগলের অধীনস্থ একটি প্রতিষ্ঠান । বর্তমানে শুধু ইউটিউব থেকে ভিডিও দেখা না ইউটিউব থেকে ইনকাম করা সম্ভব । ইউটিউব এর থেকে টাকা ইনকাম করা যায় এ বিষয়ে আমরা সকলেই কমবেশি অবগত আছি । ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করতে হলে প্রথমে আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি কে ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রাম এর সাথে যোগ করতে হবে  আজকে আমরা জানবো ইউটিউবে ভিডিও ভাইরাল করার সহজ উপায় সম্পর্কে । 

ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম

ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করা যায় এ সম্পর্কে আমরা সকলেই কম বেশি জানি ।  ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি কে ইউটিউব পাটনা প্রোগ্রাম / চ্যানেলের মনিটাইজেশন অন করতে হবে । কেউ চাইলেই তার চ্যানেলের মনিটাইজেশন অন করতে পারে না-  মনিটাইজেশন অন করার জন্য ইউটিউব এর কিছু রুলস রেগুলেশন আছে ।  সেগুলো মানলে ইউটিউব আপনার চ্যানেলটিকে মনিটাইজ করে দেবে  ইউটিউব এর রুলস গুলো হল । লাস্ট এক বছরের মধ্যে 1000 সাবস্ক্রাইব এবং 4000 ঘন্টা পাবলিক  ওয়াচ টাইম  কমপ্লিট করতে হবে ।  আর এই শর্তগুলো পূরণ করার জন্য অবশ্যই আপনার চ্যানেলের ভিডিও গুলো ভাইরাল হতে হবে অন্যথায় আপনি আপনার চ্যানেলের মনিটাইজেশন অন করতে পারবেন না । মনিটাইজেশন অন না হলে ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করতে পারবেন না ।  তাই আমাদের প্রথমে জেনে নিতে হবে কিভাবে ইউটিউব এর ভিডিও ভাইরাল করা যায় । 

ইউটিউব ভিডিও ভাইরাল করার সহজ উপায় 

ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য আমাদের ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও গুলো কে ভাইরাল করতে হবে ।  প্রত্যেকটি ইউটিউব এর স্বপ্ন থাকে তার ভিডিওগুলো ভাইরাল হবে কিন্তু সঠিক গাইডলাইন না থাকার কারণে ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও গুলো ভাইরাল হয় না ।  আপনার ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিওগুলি যদি ভাইরাল হয় তাহলে আপনার ইউটিউব চ্যানেলটি আস্তে আস্তে অনেক বড় হয়ে যাবে ।  এবং আপনি ইউটিউব থেকে ভালো এমাউন্টের টাকা ইনকাম করতে পারবেন । আজকের এই লেখাটির মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন এমন কিছু নিয়মকানুন সম্পর্কে যেগুলো যদি আপনি সঠিকভাবে মানেন তাহলে অবশ্যই আপনার ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিওগুলি ভাইরাল হবে । 

  • ইউটিউব চ্যানেল কাস্টমাইজ

ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার ক্ষেত্রে অনেক বড় অবদান রাখে ইউটিউব চ্যানেল কাস্টমাইজ ।  আপনি যে চ্যানেলে ভিডিওগুলো আপলোড করবেন সেই চ্যানেলটিকে সঠিকভাবে কাস্টমাইজ করতে হবে । যেমন চ্যানেলের একটি ইউনিক নাম দিতে হবে,  চ্যানেলের জন্য সুন্দর একটি ব্যানার এবং  লোগো লাগাতে হবে ।  ইউটিউব চ্যানেলের ট্যাগ ,  চ্যানেল ভেরিফাই ইত্যাদি সবকিছু সঠিক ও সুন্দর ভাবে করতে হবে ।

  •  কোয়ালিটিফুল ভিডিও আপলোড

ইউটিউব চ্যানেলের সব সময় ইউনিক এবং কোয়ালিটি ফুল ভিডিও আপলোড করতে হবে ।  ভিডিও ভাইরাল হবে অনেক ক্ষেত্রে কাজ করে এটি ।  আপনি যে বিষয় নিয়ে কাজ করেন না কেন আপনার ভিডিও গুলো যেন সুন্দর স্পষ্ট হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে । ভিডিও গুলো এমন ভাবে তৈরি করতে হবে যেন আপনার দর্শক সম্পূর্ণ ভিডিওটি দেখে ।  দর্শক যখন আপনার ভিডিওটি সম্পূর্ন দেখবে তখন আপনার ওই ভিডিও এবং ইউটিউব চ্যানেলের রিস অনেক বেড়ে যাবে । রিস বেড়ে গেলে ভিডিওগুলো ভাইরাল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক গুন বেড়ে যায় ।

  • ভাইরাল টপিকে ভিডিও  তৈরি 

ভিডিও তৈরি করার ক্ষেত্রে অবশ্যই আমাদের এই বিষয়টা মাথায় রাখতে হবে । সবসময় ভাইরাল টপিকে  ভিডিও তৈরি করার চেষ্টা করতে হবে ।  ভাইরাল টপিকে ভিডিও বানালে ওই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে কারণ ইউটিউব এর দর্শকরা তখন ওই বিষয়টি নিয়ে ইউটিউবে বেশি সার্চ করে ।  আপনার ভিডিওটি যদি সার্চ রেংকিং এ আসে তাহলে আপনার ভিডিও ভিউ বেড়ে যাবে এবং ভিডিওটি ভাইরাল হবে । আমাদের সবসময় চেষ্টা করতে হবে ভাইরাল  টপিকে ভিডিও তৈরি করার জন্য ।

  • ভিডিও আপলোড এর ক্ষেত্রে রেগুলার হওয়া

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও গুলো কে ভাইরাল করার জন্য অবশ্যই আমাদের ভিডিও আপলোড এর ক্ষেত্রে রেগুলার হতে হবে ।  রেগুলার ভিডিও আপলোড এর ফলে আপনার চ্যানেলের  রিস  বেড়ে যাবে  এবং ভিডিওগুলো ভাইরাল হবে ।  এখানে রেগুলার ভিডিও আপলোড বলতে  প্রতিদিন ভিডিও আপলোড করতে হবে এমন  বোঝাইনি ।  রেগুলার ভিডিও আপলোড বলতে বুঝিয়েছেন আপনি যদি সপ্তাহে দুটো করে ভিডিও আপলোড করেন অথবা দুইদিন পর পর ভিডিও আপলোড করেন তাহলে আপনি চেষ্টা করবেন সব সময় দুইদিন পরপর ভিডিও আপলোড করার ।  এবং আপনি নির্দিষ্ট একটা টাইম সিলেক্ট করে নিবেন যে টাইমে আপনি সবসময় ভিডিও আপলোড করবেন ।  ভিডিও ভাইরাল করার ক্ষেত্রে রেগুলার ভিডিও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।  আপনি যদি আপনার চ্যানেলের ভিডিও গুলো কে ভাইরাল করতে চান এবং ভাইরাল করে মনিটাইজ এর মাধ্যমে টাকা ইনকাম করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে রেগুলার ভিডিও আপলোড করতে হবে ।

  • ভিডিও ভালোভাবে এস ই ও করা

ভিডিও ভাইরাল এর ক্ষেত্রে সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এসইও ।  আপনি একটা ভিডিও আপলোড এর আগে ভিডিওটি সঠিকভাবে এসইও করে নিবেন ।  সঠিকভাবে এসইও করার ফলে ভিডিওটি আপনার টার্গেট অডিয়েন্স এর কাছে পৌঁছাবে এবং ভিডিওটি সার্চ রেংকিং এ শো করবে । যখন আপনার ভিডিওটি অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছাবে এবং সার্চ রেংকিং এ ভিডিওটি শুরু করবে তখন ওই ভিডিওটার ভিউজ এর সংখ্যা অনেক বেড়ে যাবে এবং ভিডিওটি ভাইরাল হবে ।  ভিডিও এসইও করা বলতে বুঝিয়েছি  সঠিকভাবে ভিডিওর টাইটেল, ট্যাগ, ডিসক্রিপশন বক্স, এবং থাম্মেল দেয়া । একটি ভিডিও ভাইরাল এর ক্ষেত্রে যথাযথ ভূমিকা পালন করে এগুলো ।  আপনি একটি ভিডিওর জন্য সুন্দর একটি টাইটেল নির্বাচন করবেন ।  এবং ভিডিও সম্পর্কে বিস্তারিত আপনার ডেসক্রিপশন বক্সে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করবেন ।  ভিডিও রিলেটেড ভাইরাল  ট্যাগ গুলো ব্যবহার করবে ।  সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস ভিডিও থাম্বেল যেটা দেখে দর্শকরা আপনার ভিডিওতে ক্লিক করবে  সেই থাম্মেল সুন্দরভাবে তৈরি করতে হবে ।  যেন  দর্শকরা আপনার থাম্মেল টি দেখে ভিডিও তে ক্লিক করে । কিন্তু অ্যাট্রেক্টিভ থাম্মেল ব্যবহার করা যাবে না । ভিডিও রিলেটেড থাম্মেল ব্যবহার করতে হবে ।  ভিডিও ভাইরাল এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এস ই ও । আপনি যদি আপনার ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও গুলো কে ভাইরাল করতে চান তাহলে অবশ্যই ভিডিও গুলো কে সঠিকভাবে সুন্দর করে এস ই ও করতে হবে ।

  • সোশ্যাল মিডিয়ায় লিংক শেয়ার

সোশ্যাল মিডিয়ায় লিংক শেয়ার করার মাধ্যমে আমরা আমাদের ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও গুলো তে ভিউ  আনতে পারি । মনে করেন আপনার ফেসবুকে 10,000 এর বেশী ফলোয়ার আছে  আপনি যদি ওই ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বা পেজে আপনার ইউটিউব ভিডিও এর লিংক শেয়ার করেন তাহলে ওখান থেকে অনেক মানুষ আপনার দেয়া লিঙ্কে ক্লিক করে আপনার ভিডিওটি দেখবেন ।  এভাবে করে আপনার ইউটিউব ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে ।  তবে লিংক শেয়ারের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে একটা লিংক বারবার এক জায়গায় শেয়ার করা যাবে না এতে করে ফেসবুক আপনার ওই লিংকটি  স্পাম করে দিতে পারে । লিংক শেয়ারের ক্ষেত্রে এ বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে ।

 

আশা করি ইউটিউব ভিডিও কিভাবে ভাইরাল করবেন সে সম্বন্ধে কিছুটা ধারনা পেয়েছেন ।  উপরে উল্লিখিত স্টেপগুলো যদি সঠিকভাবে মেনে চলেন এবং সে অনুযায়ী কাজ করতে পারেন তাহলে অবশ্যই আপনার ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিওগুলি ভাইরাল হবে ।

আরো পড়তে পারেন: সেভিংস একাউন্ট  কি 

Sharing Is Caring:

এই ওয়েবসাইটি মূলত প্রযুক্তির খবর, ব্যাংক ও বিমা, পড়াশোনা, টিপস এন্ড ট্রিকস, ভিসার খবর, স্বাস্থ্য টিপস ও অনলাইন ইনকাম সম্পর্কিত তথ্যের বিরাট একটি প্ল্যাটফর্ম।

Leave a Comment