পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম

পেপাল হলো একটি আর্থিক লেনদেন করার মাধ্যম। এই লেখাটিতে আমরা পেপাল সম্পর্কে এবং পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। এবং সহজে পেপাল একাউন্ট খোলার কিছু টিপস দেখানো হবে আশাকরি লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়বেন। 

পেপাল একাউন্ট খোলার  নিয়ম

বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে আমরা এখন ভার্চুয়াল ভাবে টাকার লেনদেন করতে পারে। এক সময় এই বিষয়টা স্বপ্নের মতো মনে হলেও বর্তমানে প্রযুক্তি এটিকে বাস্তব করে দেখিয়েছে। ভার্চুয়াল ভাবে লেনদেন এর ফলে আমাদের টাকা হারিয়ে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা থাকেনা এবং অল্প সময়ে নিজেদের সময় কে বাঁচিয়ে লেনদেন করতে পারি।

বর্তমান সময়ে উন্নত দেশগুলোতে টাকা হাতে না রেখে পেপালের মাধ্যমে লেনদেন করে। পেপালকে আমরা একটি আর্থিক লেনদেনের মাধ্যম বলতে পারি। পেপালের মাধ্যমে পৃথিবীর যেকোন প্রান্তে খুবই অল্প সময়ের মধ্যে টাকা পাঠিয়ে দিতে পারব।

আমরা সকলেই জানি বাংলাদেশে পেপাল সাপোর্ট করে না। কবে বাংলাদেশে পেপাল চালু হবে এ সম্পর্কে এখন পর্যন্ত কোনো ধারণা পাওয়া যায়নি। তবে আমরা যারা ফ্রিল্যান্স আছি বা ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে কাজ করি তাদের প্রতিনিয়ত পেপাল এর প্রয়োজন হয়।

তবে বাংলাদেশে পেপাল বন্ধ থাকার পরেও আপনি কিভাবে পেপাল একাউন্ট খুলে পেপাল ব্যবহার করবেন সে সম্পর্কে এই লেখাটিতে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে। পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম জানার আগে পেপাল সম্পর্কে একটু বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।

পেপাল একাউন্ট এর কাজ কি? এবং কিভাবে ব্যবহার করবেন? 

পেপাল হলো একটি মোবাইল অনলাইন ব্যাংকিং ব্যবস্থা। আমাদের দেশে যেমন বিকাশ, নগদ, ও রকেট আসে ঠিক তেমনি পেপাল ও হল একটি অনলাইন ব্যাংকিং। পেপালের মাধ্যমে আমরা বিশ্বের যেকোন প্রান্তে লক্ষ লক্ষ টাকা (ডলার) লেনদেন করতে পারব। 

পেপাল হলো একটি ডুয়েল কারেন্সি যুক্ত একাউন্ট। ডুয়েল কারেন্সি এর মাধ্যমে আপনি এক দেশের টাকা অন্য দেশের টাকায় রূপান্তর করতে পারবেন। যেমন আপনি বাংলাদেশের টাকাকে ডলারে রূপান্তর করতে পারবেন।  পিপাল ব্যবহার করে আমরা ইন্টারন্যাশনাল যেকোনো অনলাইন শপিং থেকে কেনাকাটা করতে পারব।

এছাড়াও পেপালের অনেক ব্যবহার রয়েছে। কিন্তু সমস্যা একটাই! বাংলাদেশ থেকে পেপাল ব্যবহার করা যায় না। তবে এই লেখাটিতে আমরা এমন কিছু টিপস শেয়ার করবো যেগুলো ব্যবহার করে আপনারা বাংলাদেশ থেকেও পেপাল ব্যবহার করতে পারবেন।

বাংলাদেশ থেকে পেপাল ব্যবহার করার পদ্ধতি 

যেহেতু বাংলাদেশ থেকে পেপাল ব্যবহার করার নিয়ম নেই  তবে আমরা যারা ফ্রিল্যান্স আছি তাদের অবশ্যই পেপাল ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে সেহেতু আমরা পেপাল ব্যবহারের জন্য অন্য কিছু পদ্ধতি ব্যবহার করব। বাংলাদেশ সরকার স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে তারা কোনোভাবেই পেপালকে সম্মতি দিতে রাজি না। 

আচ্ছা আমরা যদি একটা জিনিস চিন্তা করি বাংলাদেশ সরকার কিভাবে পেপাল কে বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ড করল? এর উত্তর হলো বাংলাদেশ সরকার আমাদের দেশের আইপি থেকে পেপাল প্লাটফর্ম কে ব্লক করে দিয়েছে। বাংলাদেশের আইপি ব্যবহার করে যদি কেউ পেপাল একাউন্ট খুলতে চায় বা ব্যবহার করতে চায় তাহলে সে এটি করতে পারবে না।

আর যদি কোনভাবে একাউন্ট খুলে খুব শীঘ্রই সেটি বন্ধ হয়ে যাবে। আপনারা যদি বাংলাদেশ থেকে পেপাল ব্যবহার করতে চান সে ক্ষেত্রে আপনাদেরকে বাংলাদেশের আইপি চেঞ্জ করে, ভিপিএন ব্যবহার করে পেপাল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে হবে। যাতে কোনোভাবেই পেপালের বট আপনার আইপি ট্রাক করতে না পারে। 

সহজে পেপাল একাউন্ট খোলার পদ্ধতি 

চলুন সহজে পেপাল একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক। তবে যারা বাংলাদেশ থেকে পেপাল অ্যাকাউন্ট খুলবেন তারা অবশ্যই উপরের লেখাগুলো কে ভালোভাবে পড়ে এবং সেখানে দেখানো রুলস গুলো মেনে পেপাল একাউন্ট খুলতে আসবেন। অন্যথায় আপনার পেপাল অ্যাকাউন্ট খোলার সাথে সাথে ব্লক হয়ে যাবার সম্ভাবনা আছে। 

পেপাল একাউন্ট খোলার জন্য প্রথমে যেকোনো একটি ব্রাউজার থেকে পেপাল এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। সেখান থেকে সাইন-ইন অপশনে যেতে হবে। অথবা আপনারা নিচের লিঙ্কে ক্লিক করে সরাসরি একাউন্ট খোলার পেইজে চলে যেতে পারবেন (https://www.paypal.com/bizsignup/#/checkAccount

  • এখান থেকে আপনাকে একাউন্ট রেজিস্টার করতে হবে। রেজিস্ট্রেশন করার সময় অবশ্যই বিজনেস অ্যাকাউন্ট সিলেক্ট করে রেজিস্ট্রেশন করবেন।
  • এরপর নিচে একটি খালি বক্স দেখতে পাবেন এখানে আপনার একটি জিমেইল অ্যাকাউন্ট বসিয়ে দিন, যেই জিমেইল অ্যাকাউন্ট দিয়ে পেপাল ক্রিয়েট করার চাচ্ছেন।
  • এরপরে কিছু সময় অপেক্ষা করার পড়ে আপনাদের সামনে নতুন আরেকটি ইন্টারফেস নিয়ে আসবে এখানে কিছু তথ্য চাওয়া হবে সেগুলো সঠিকভাবে পূরণ করুন।
  • একটু লোড নিয়ে Tell Us About Your Business নামক একটি পেজে নিয়ে আসবে এখানে আপনাদের ব্যবসার সকল তথ্য দিতে হবে। ইনফর্মব্দ পূরণের ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে।
  • এভাবে করে তাদের সকল ফ্রম গুলো পূরণ করলে আপনার পেপাল অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েট হয়ে যাবে।
  • সব থেকে মজার বিষয় হল বাংলাদেশ থেকে পেপাল ব্যান্ড হওয়ার শর্ত ও আপনি যদি এখানে আপনার নিজের ব্যবহৃত পার্সোনাল নাম্বারটি দিয়ে তৈরী করতে চান তাহলে করতে পারবেন।

আপনাদের সুবিধার্থে নিচে দেওয়া ভিডিওটি দেখে সরাসরি খুব সহজেই পেপাল একাউন্ট খুলতে পারবেন বাংলাদেশ থেকে। পেপাল একাউন্ট খোলার প্রসেস অনেক বড় যার কারণে লেখার মাধ্যমে সবকিছু বুঝিয়ে বলা সম্ভব নয় তাই ভিডিওটি দেয়া। 

ভিডিওটির সম্পূর্ন ক্রেডিট  Freelancer Nabab ইউটিউব চ্যানেল এর। সরাসরি ইউটিউবে ভিডিওটি দেখতে পারেন। এই ভিডিওটি দেখে খুব সহজেই আপনারা একটি পেপাল অ্যাকাউন্ট খুলে নিতে পারবেন বাংলাদেশ থেকে।

পেপাল একাউন্ট থেকে টাকা তোলার পদ্ধতি 

অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন যে বাংলাদেশে পেপাল একাউন্ট বন্ধ থাকার পরেও আমরা কিভাবে পেপাল থেকে টাকা তুলতে পারব।  এখানে একটি মজার বিষয় হলো বাংলাদেশে পেপাল বন্ধ থাকার পরেও আমরা বাংলাদেশের যে কোন ব্যাংকেই পেপ্যাল এর টাকা উত্তোলন করতে পারব।

অথবা আপনার যদি ক্রেডিট কার্ড বা ডেবিট কার্ড ও মাস্টার কার্ড থাকে তাহলে আপনি এই কারণে সরাসরি পেপাল থেকে টাকা উইড্রো করতে পারবেন। অথবা আপনি কে পানি সরাসরি আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট যুক্ত করে টাকা তুলে নিতে পারবেন।

আরো পড়তে পারেন : মোবাইল দিয়ে ফাইবারে কাজ

Sharing Is Caring:

এই ওয়েবসাইটি মূলত প্রযুক্তির খবর, ব্যাংক ও বিমা, পড়াশোনা, টিপস এন্ড ট্রিকস, ভিসার খবর, স্বাস্থ্য টিপস ও অনলাইন ইনকাম সম্পর্কিত তথ্যের বিরাট একটি প্ল্যাটফর্ম।

Leave a Comment