প্লেজিয়ারিজম কি | প্লেজিয়ারিজম কত প্রকার ও কি কি

যেকোন উৎসের লেখা সংযোজন করা হোক না কেন তাতে মূল লেখক বা মূল কর্মের স্রষ্টার নাম অবশ্যই সংশোধন করা উচিত। এটিই মূল বিধান। এর ব্যতিক্রম হলে তা অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। আর এ ধরনের অপরাধই হল প্লেজিয়ারিজম।

প্লেজিয়ারিজম

তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও প্লেজিয়ারিজমের প্রচলন লক্ষ্য করা যায়। বিশেষ করে অন্যের ধ্যান-ধারণা গবেষণা, কৌশল প্রোগ্রামিং কোড, গ্রাফিক্স, কথা লেখা, ডেটা, ছবি, শব্দ, গান ইত্যাদির উৎস অনেক ক্ষেত্রে উল্লেখ না করে নিজের নামে চালিয়ে দেয়া হয়।

বর্তমানে শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্লেজিয়ারিজমের ব্যাপক অপপ্রয়োগ লক্ষ্য করা যায়। এর কারণ হল ইন্টারনেটে ব্যাপক তথ্য বিনামূল্যে ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়।

তবে বিভিন্ন তথ্য উন্মুক্তভাবে ব্যবহারের জন্য রাখা হলও এগুলো ব্যবহারের জন্য কিছু নীতিমালা রয়েছে এবং এগুলোও ইন্টারনেটে এক ধরনের লাইসেন্সের আওতাভুক্ত। এই লাইসেন্সটি ক্রিয়েটিভ কমন লাইসেন্স বা CCL নামে পরিচিত।

আর এই পাবলিক নীতিমালার অন্তর্গত তথ্যসমূহ থেকেও বিনামূল্যে ব্যবহার করতে পারলেও এক্ষেত্রে অবশ্যই এর উৎসের নাম উল্লেখ করা অত্যাবশ্যক। বিশ্ববিখ্যাত মুক্ত জ্ঞানভান্ডার উইকিপিডিয়ার সকল তথ্যের এই ক্রিয়েটিভ কমেন্টস লাইসেন্স এর অন্তর্ভুক্ত।

আজকাল শিক্ষার্থীরা অনেকেই তাদের নেট, গবেষণাপত্র, আইডিয়া পেপার প্রভৃতিতে ইন্টারনেট থেকে আহরিত যেকোন তথ্য কোন উৎস উল্লেখ ছাড়াই সংযোজিত করে ফেলে। আর এই ধরনের কর্মকান্ডগুলো প্লেজিয়ারিজমের পর্যায়ে পড়ে এবং এগুলো মৌলিক গবেষণার ক্ষেত্রে একটি মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠতে পারে।

এর ফলে যে কেউ অন্য কারও নিজস্ব মৌলিক কর্মকান্ডকে তার অনুমতি ব্যতিরেকেই ব্যবহার এমনকি নিজের নামে তা প্রচারে উৎসাহী হবে, যা ব্যক্তিগত প্রাইভেসি তো বটেই সেই সাথে সামাজিক ভারসাম্যের বিষয়গুলোকে দুর্বল করে তুলবে।

প্লেজিয়ারিজম কত প্রকার ও কি কি?

প্লেজিয়ারিজম চার প্রকারঃ

  • সম্পূর্ণ প্লেজিয়ারিজম বা ডিরেক্ট প্লেজিয়ারিজম (Complete plagiarism or direct plagiarism)
  • মোজাইক প্লেজিয়ারিজম (Mosaic Plagiarism)
  • প্যারাফ্রেজ প্লেজিয়ারিজম (Paraphrase Plagiarism)
  • এক্সিডেন্টাল প্লেজিয়ারিজম (Accidental Plagiarism)

সম্পূর্ণ প্লেজিয়ারিজম বা ডিরেক্ট প্লেজিয়ারিজম (Complete plagiarism or direct plagiarism)

প্রত্যক্ষ প্লেজিয়ারিজম হল অন্যের কোন লেখা হুবহু নিজের নামে প্রকাশ করা। অর্থাৎ কোন ধরনের রেফারেন্স ছাড়াই অন্যের লেখা কিংবা লেখার অংশ হুবহু নকল করে নিজের কাজে ব্যবহার করা।

মোজাইক প্লেজিয়ারিজম (Mosaic Plagiarism)

মোজাইক প্লেজিয়ারিজম হচ্ছে কোন প্রকার উদ্ধৃতি চিহ্ন (Quotation mark) কিংবা রেফারেন্স করা ছাড়াই অন্যের লেখার বাক্যাংশ, কিছু শব্দ কিংবা পাঠকে নিজের লেখার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা। আর এটি প্রায় (Paraphrase Plagiarism) এর মতো।

প্যারাফ্রেজ প্লেজিয়ারিজম (Paraphrase Plagiarism)

প্যারাফ্রেজ প্লেজিয়ারিজম হচ্ছে অন্যের লেখার কিছুটা পরিবর্তন করে নিজস্ব হিসাবে দাবী করা। অর্থাৎ লেখার শব্দ কিংবা বাক্যের গড়মিল করে সামান্য পরিবর্তন করার মাধ্যমে নিজের কর্ম বলে দাবী করা।

এক্সিডেন্টাল প্লেজিয়ারিজম (Accidental Plagiarism)

যখন কোন ব্যক্তি তার সংগ্রহীত তথ্যের সঠিক রেফারেন্স দিতে ভুল করে কিংবা অনিচ্ছাকৃত/অবহেলার জন্য ভুলভাবে দেখায় তখন তাকে এক্সিডেন্টাল প্লেজিয়ারিজম বলে। এগুলো ছাড়াও আরও বিভিন্ন ধরনের প্লেজিয়ারিজম রয়েছে।

প্লেজিয়ারিজম একটি বড় অনৈতিক কর্ম, যেখানে কন্টেন্টের আসল মালিক চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে থাকে। তবে বর্তমানে এটিকে থেকে আসল মালিককে রক্ষা করার জন্য অনেক ধরনের নিয়ম ও নীতি প্রকাশ হয়েছে।

Sharing Is Caring:

এই ওয়েবসাইটি মূলত প্রযুক্তির খবর, ব্যাংক ও বিমা, পড়াশোনা, টিপস এন্ড ট্রিকস, ভিসার খবর, স্বাস্থ্য টিপস ও অনলাইন ইনকাম সম্পর্কিত তথ্যের বিরাট একটি প্ল্যাটফর্ম।

Leave a Comment