বিধবা ভাতা আবেদন করার নিয়ম

বিধবা ভাতা (Widow’s Allowance) হল সমাজসেবা অধিদপ্তরের একটি সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মসূচি। প্রতিবছর একটি নির্দিষ্ট সময়ে বিধবা ভাতা আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হয়ে থাকে।

২০২৩ সালের আবেদন গ্রহণ প্রক্রিয়া ১০ আগস্ট থেকে ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলমান ছিল। আপনার পরিবারের কিংবা এলাকার কারো বিধবা ভাতার জন্য আবেদন করতে অনলাইনে ও সরাসরি বিধবা ভাতা আবেদন করার নিয়ম।

বিধবা ভাতা

ভাতা প্রাপ্তির শর্তাবলী, কারা পাবেন, প্রার্থী নির্বাচনের মানদণ্ড, কতো টাকা পাবেন, এই ভাতার লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য সম্পর্কিত সকল বিস্তারিত তথ্য নিয়েই আজকের এই আটিকেল। বিবিএস (BBS)-এর জরিপ অনুযায়ী, বর্তমানে দেশের মোট নারী জনগোষ্ঠীর নয় দশমিক পাঁচ শতাংশ বিধবা (প্রায় ৫৩ লক্ষ)।

এর মধ্যে অধিকাংশ নারীই অসহায় এবং দুস্থ জীবনযাপন করেন। বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা নারীদের সামাজিক নিরাপত্তা বিধান, মনোবল জোরদার, মর্যাদা বৃদ্ধি ও চিকিৎসা সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যে এই ভাতার কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে।

Table of Contents

বিধবা ভাতা কি?

সমাজের দুস্থ, অসহায় বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা নারীদের কল্যাণের উদ্দেশ্যে ১৯৯৮ থেকে ৯৯ অর্থবছরে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন সমাজসেবা অধিদপ্তর এসব মহিলাদের জন্য ভাতা কর্মসূচি প্রবর্তন করে।

অসহায় বিধবা নারীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, সামাজিক নিরাপত্তা বিধান এবং মর্যাদা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এটি পরিচালিত হয়ে থাকে। ২০০৩ থেকে ০৪ অর্থবছরে এই উন্নয়ন কর্মসূচিটি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় হতে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়।

বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলা ভাতা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে এবং গতিশীলতা বৃদ্ধির জন্য ২০১০ থেকে ১১ অর্থবছরে সরকার পুনরায় সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নিকট এই কর্মসূচি ন্যস্ত করে।

১৯৯৮ থেকে ৯৯ অর্থবছরের পর থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত এই কর্মসূচিটি ধারাবাহিকভাবে সফলতার সঙ্গে পরিচালিত হচ্ছে।

বিধবা ভাতা কারা পাবে?

মূলত স্বামী নিগৃহীতা ও বিধবা নারীরা বিধবা ভাতা কর্মসূচির আওতাভুক্ত হয়। সাধারণত বিধবা বলতে হচ্ছে যাদের স্বামী মৃত্যুবরণ করেছেন এবং সেসব মহিলা পুনঃবিবাহ করেন নি, শুধুমাত্র তাদেরকে বোঝানো হয়।

স্বামী নিগৃহীতা হচ্ছে সেসব মহিলা, যারা স্বামী কর্তৃক তালাকপ্রাপ্ত অথবা অন্য যেকোন কারণে অন্তত দুই বছর যাবত স্বামীর সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন বা একত্রে বসবাস করেন না।

এই দুই ধরণের আওতাভুক্ত নারীদের মধ্যে উপজেলা সমাজসেবা অফিসের বাছাই কমিটি (Selection Committee) কর্তৃক বাছাইকৃত প্রার্থীরাই বিধবা ভাতা পাবেন।

ভাতা প্রাপ্তির যোগ্যতা ও শর্তাবলী?

বিধবা ভাতা প্রাপ্তির জন্য একজন উপযুক্ত প্রার্থী হতে আবেদনকারীকে নিম্নে উল্লেখিত যোগ্যতা ও শর্তাবলী পূরণ করতে হবে। যেমনঃ

  • আবেদনকারী যেই এলাকা থেকে আবেদন করবে সেই এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
  • অধিক বয়স্ক, অসহায় ও দুস্থ বিধবা বা স্বামী নিগৃহীতা নারীরা আবেদনের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন।
  • আবেদনকারীর ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন সনদ (১৭ সংখ্যার) বা ভোটার আইডি কার্ড থাকতে হবে।
  • আবেদনকারীর বার্ষিক গড় আয় ১২০০০ টাকা বা তারও কম হতে হবে।
  • যেই বিধবা বা স্বামী নিগৃহীতা নারীদের ১৬ বছরের কম বয়সী ২টি সন্তান রয়েছে, সেসব নারীরা অগ্রাধিকার পাবেন।
  • ভূমিহীন ও অসহায় বিধবা বা স্বামী নিগৃহীতা নারীরা আবেদনের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন।
  • আবেদনকারীদের মধ্যে যারা প্রতিবন্ধী, অসুস্থ কিংবা কর্মক্ষমতাহীন সেসব আবেদনকারী ভাতা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন।
  • ভাতা প্রাপ্তির জন্য, অবশ্যই উপজেলা সমাজসেবা অফিসের সংশ্লিষ্ট বাছাই কমিটি কর্তৃক নির্বাচিত হতে হবে।

বিধবা ভাতা আবেদন করতে কী কী লাগে?

বিধবা ভাতার জন্য অনলাইনে আবেদন করতে এবং সমাজসেবা কার্যালয় থেকে অনুমোদন পেতে বেশ কিছু কাগজপত্র প্রয়োজন। এসব প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলো হলঃ

  • জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি
  • আবেদনকারীর ২ কপি (Copy) পাসপোর্ট সাইজের (Passport size) রঙিন ছবি
  • স্বামীর মৃত্যু সনদ (Death Certificate) বা মৃত্যুর প্রমাণপত্র
  • বিধবা ভাতার জন্য অনলাইনে বা অফলাইনে পূরণ করা আবেদন ফরম।
  • একটি সচল মোবাইল নাম্বার
  • মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট (Mobile banking account) (বিকাশ, নগদ, রকেট, উপায় ইত্যাদি)

এছাড়াও নিকটস্থ সমাজসেবা কার্যালয় থেকে তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী আরও কিছু কাগজপত্র চাইতে পারে।

অনলাইনে বিধবা ভাতা আবেদন করার নিয়ম?

সমাজসেবা অধিদপ্তর এর সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বিষয়ক ওয়েবসাইটে বিধবা ভাতার জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হয়। যেহেতু এই আবেদনের ভিত্তিতেই যোগ্যপ্রার্থী বাছাই করা হয়ে থাকে তাই সঠিকভাবে আবেদন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

অবশই মনে রাখবেন আবেদন সাবমিট (Submit) করার পর তা পুনরায় সংশোধন করা যায় না। তাই যোগ্য প্রার্থী হিসেবে অনুমোদন পেতে নির্ভুল ভাবে আবেদন করার জন্য (যারা ইতিমধ্যে ভাতা পাচ্ছেন তাদের আবেদন করতে হবে না) অনলাইনে বিধবা ভাতার আবেদন প্রক্রিয়াটি নিম্নে ছবিসহ ধাপে ধাপে দেখানো হল।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রবেশ?

বিধবা ভাতার অনলাইন আবেদন করতে সমাজসেবা অধিদপ্তর এর সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আবেদন ফরমে প্রবেশ করুন। মূল ওয়েবপেইজে (Webpage) যেতে প্রবেশ করুনঃ https://mis.bhata.gov.bd/onlineApplication, এই লিংকে (Link)।

অনলাইনে বিধবা ভাতা আবেদন করার নিয়ম?

এখানে কার্যক্রম অপশনে (Option) অবশ্যই ভাতার ধরণ নির্বাচন করতে হবে। এরপর নির্বাচন করুন ঘরের ডানপাশের ড্রপডাউন (Drop-down) অপশনে ক্লিক করে ভাতার অপশনগুলো থেকে বিধবা ভাতা নির্বাচন করুন। এবার আপনি একটি বিস্তারিত অনলাইন আবেদন ফরম দেখতে পাবেন।

ব্যক্তিগত তথ্য যাচাই

আবেদন করার জন্য আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র কিংবা জন্ম নিবন্ধন সনদ যাচাই করতে হবে। আপনার কাছে যেই ডকুমেন্ট (Document) রয়েছে। সেটি সিলেক্ট (Select) করুন। এরপর জাতীয় পরিচয়পত্র সিলেক্ট করলে, আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার লিখুন।

(জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর অবশ্যই ১০ অথবা ১৭ সংখ্যার হতে হবে) পাশের জন্ম তারিখ এর ঘরে ক্যালেন্ডার (Calendar) অপশনে ক্লিক (Click) করে, সঠিক তারিখটি সিলেক্ট করে যাচাই করুন। এরপর দেখবেন আইডি কার্ড অনুযায়ী ছবিসহ সকল তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে পূরণ হয়ে যাবে।

যেসব তথ্যের ঘর খালি থাকবে, তা লিখে অবশ্যই পূরণ করুন। এই তথ্যগুলোর মাধ্যমে মূলত বিধবা ভাতা আবেদন এর ক্ষেত্রে প্রার্থীর সামগ্রিক অবস্থা তুলে ধরতে হয়। এখানে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো হলঃ

  • শিক্ষাগত যোগ্যতা
  • স্বাস্থ্যগত বা কর্মক্ষমতা সম্পর্কিত তথ্য
  • বৈবাহিক অবস্থা (বিবাহিত, অবিবাহিত, বিধবা, তালাকপ্রাপ্ত, বহুবিবাহ ইত্যাদি) নির্বাচন করুন
  • বার্ষিক আয়ের পরিমাণ
  • পরিবারের সদস্য সংখ্যা (পুরুষ, মহিলা ও হিজড়া)
  • পেশা
  • ভূমির মালিকানা
  • সরকারি কিংবা বেসরকারি সুবিধা প্রাপ্তির বিবরণ
  • বাসস্থানের (নিজস্ব, ভাড়া, গৃহহীন বা অন্যান্য)

অনলাইনে বিধবা ভাতা আবেদন করার নিয়ম?

আবেদনকারীর যোগাযোগ এবং ঠিকানা সংক্রান্ত তথ্য। এই ধাপে আবেদনকারীর বর্তমান ঠিকানার বিবরণ দিতে হবে। যেমনঃ

  • বিভাগ, জেলা, উপজেলা সিলেক্ট করুন
  • পোস্ট কোড (Post code) লিখুন
  • গ্রাম/বাড়ির হোল্ডিং (Holding) ঠিকানার তথ্য দিন
  • অবস্থান অপশনে, আপনি যেই এলাকার আওতাধীন (ইউনিয়ন পরিষদ/সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভা) তা সিলেক্ট করুন
  • একইভাবে স্থায়ী ঠিকানার সকল তথ্য পূরণ করুন।
  • বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা অনুরূপ হলে একই ঠিকানা লেখার পার্শ্ববর্তী ঘরে ক্লিক করুন।

এখন আমরা চতুর্থ ধাপে অনলাইনে বিধবা ভাতা আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে জানবো। যেমনঃ

  • নিম্নে আপনার একটি ইমেইল (Email) ঠিকানা লিখুন। (ঐচ্ছিক)
  • বিকাশ কিংবা নগদ একাউন্টসহ একটি সচল মোবাইল নাম্বার লিখুন। (যে নাম্বারে ভাতার টাকা পেতে আপনি ইচ্ছুক)
  • অবশ্যই মোবাইল নাম্বারের মালিকানা বাছাই করুন।

এখানে বিধবা ভাতা আবেদনের জন্য আপনি যোগ্য কিনা সে সম্পর্কিত সকল তথ্যাদি পূরণ হবে। এক্ষেত্রে আবেদনকারীর যেমনঃ

  • খানায় বিভিন্ন সুবিধা প্রাপ্তির তথ্য
  • খানা প্রধানের তথ্য
  • বাসগৃহের তথ্য
  • পরিবারের কেউ গত এক বছরে সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী কর্মসূচির আওতায় কোন সহায়তা পেয়েছে কিনা ইত্যাদি তথ্য দিতে হবে।
  • গত এক বছরে আবেদনকারীর খানায় বিদেশে অবস্থানকারী কারো নিকট থেকে অর্থ পেয়েছে কিনা।

সকল তথ্য পূরণ সম্পন্ন হলে, বিস্তারিত তথ্য পূনরায় ভাল করে রিভিউ (Review) করে নিন। এরপর নিচের সংরক্ষণ বাটনে ক্লিক করে অনলাইনে বিধবা ভাতা আবেদন জমা দিন। আবেদন সাবমিট করার পর আপনার আবেদনটি সফলভাবে গৃহীত হয়েছে।

এরকম লেখা একটি স্বয়ংক্রিয় পেজ দেখতে পাবেন। সেখান থেকে প্রিন্ট (Print) অপশনে ক্লিক করে অবশ্যই আবেদনের কপিটি প্রিন্ট করে নিন। যদি কম্পিউটারে প্রিন্টার (Printer) সংযুক্ত না থাকে। তাহলে ফরমটি পিডিএফ (PDF) কপি ডাউনলোড (Download) করে নিন।

এবং আপনি পরবর্তীতে প্রিন্ট করে স্থানীয় চেয়ারম্যান/পৌরসভার কাউন্সিলর এর (Counselor) স্বাক্ষর নিয়ে সংরক্ষণ করুন। বিধবা ভাতার আবেদনের মূল কার্যক্রম উপজেলা সমাজসেবা অফিসে পরিচালিত হয়ে থাকে। তাই আপনাকে সেখানে আবেদন জমা দিতে হবে। আবেদনের জন্য প্রয়োজন হবে। যেমনঃ

  • নাগরিকত্ব সনদ
  • আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি
  • পুনঃবিবাহ না করার প্রত্যয়ন পত্র
  • অনলাইনে আবেদন ফরমের প্রিন্ট কপি

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার নিকট আপনার এসব কাগজপত্র জমা দিলে তা কমিটি কর্তৃক যাচাই বাছাই করা হবে। এরপর প্রার্থী নির্বাচনের মানদণ্ড অনুযায়ী যোগ্য প্রার্থীরা ভাতার জন্য অনুমোদন পাবেন।

সরাসরি বিধবা ভাতা আবেদন করার নিয়ম?

গ্রামীণ অসহায় মানুষদের জন্য বিধবা ভাতার অনলাইন আবেদন ফরম পূরণ করা তেমন একটা সহজ কাজ নয়। তাই এসব মানুষ সরাসরি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ কিংবা পৌরসভায় লিখিত আবেদন ফরম জমা দিতে পারেন।

প্রথমে আপনার এলাকার ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে গিয়ে একটি আবেদন ফরম সংগ্রহ করবেন। এরপর তা সঠিকভাবে পূরণ করে এর সাথে আবেদনকারীর এক কপি ছবি এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি সংযুক্ত করবেন।

স্বাক্ষরের স্থানে আপনার স্বাক্ষর দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে অবশ্যই জমা দিন। পরবর্তীতে আপনার ইউনিয়ন পরিষদের কর্মকর্তাগণ পুনরায় অনলাইনে আবেদন করে বাকি কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।

প্রার্থী নির্বাচনের মানদণ্ড?

স্থানীয় সমাজসেবা অফিসে আবেদন জমা দেওয়ার পর একটি অনুমোদিত কমিটি কর্তৃক যোগ্য প্রার্থীদের বাছাই করা হয়ে থাকে। প্রার্থী নির্বাচন ক্ষেত্রে কিছু নির্ধারিত মানদণ্ড বিবেচনা করা হয়। সেগুলো হলঃ

১. নাগরিকত্ব

আবেদনকারীকে অবশ্যই বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক হতে হবে।

২.স্বাস্থ্যগত অবস্থা বিবেচনা

আবেদনকারীদের মধ্যে যিনি সম্পূর্ণরূপে কর্মক্ষমতাহীন তিনি মূলত সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাবেন।

৩. বয়স বিবেচনা

আবেদনকারী বিধবা নারীর বয়স অবশ্যই ১৮ বছর কিংবা তার বেশি হতে হবে। অধিক বয়স্ক আবেদনকারীরা এক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন।

৪.আর্থ-সামাজিক অবস্থা

আর্থিক অবস্থা

ভূমিহীন, গৃহহীন, নিঃস্ব ও উদ্বাস্তু বিধবা নারীরা ক্রমানুসারে অগ্রাধিকার পাবেন।

সামাজিক অবস্থা

সামাজিকভাবে দুর্দশাগ্রস্থ, নিঃসন্তান, পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন বিধবা নারীরা ক্রমানুসারে অগ্রাধিকার পাবেন।

৬.ভূমির মালিকানা

ভূমিহীন আবেদনকারীরাও অগ্রাধিকার পাবেন। এক্ষেত্রে বসতবাড়ী ব্যতিত কোন বিধবা নারীর জমির পরিমাণ ০.৫০ একর কিংবা তার কম হলে, তাকে ভূমিহীন বলে বিবেচনা করা হবে।

উপরিউক্ত মানদণ্ড বিবেচনায় বিধবা ভাতা আবেদনকারীদের বাছাই করা হয়ে থাকে।

কতো টাকা বিধবা ভাতা দেওয়া হয়?

১৯৯৮ থেকে ৯৯ অর্থবছরে চার লক্ষ তিন হাজার ১১০ জনকে এককালীন মাসিক ১০০ টাকা হারে ভাতা প্রদানের মাধ্যমে বিধবা নারীদের ভাতা কর্মসূচির সূচনা হয়। বর্তমানে অনলাইন ভিত্তিক স্বচ্ছ কর্মসূচি প্রণয়ন এবং মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবস্থায় জিটুপি (G2P)।

অথবা গভর্নমেন্ট টু পারসন (Government to Person) পদ্ধতিতে ভাতার টাকা দেওয়া হচ্ছে।২০২৩ থেকে ২৪ অর্থবছরে ২৫ লক্ষ ৭৫ হাজার জন সুবিধাভোগী মাসিক ৫৫০ টাকা হারে বিধবা ভাতার অর্থ পান। পরবর্তীতে বিধবা ভাতা আবেদন কার্যক্রমের মাধ্যমে সুবিধাভোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে বলে জানিয়েছেন।

বিধবা ভাতা কর্মসূচির ধারাবাহিকতা ও উন্নয়ন?

১৯৯৮ থেকে ৯৯ অর্থবছর থেকে ২০২৩ থেকে ২৪ অর্থবছর পর্যন্ত বিধবা ভাতার ধারাবাহিকতা নিচে তালিকাভুক্ত করা হলঃ

  • অর্থবছর উপকারভোগীর সংখ্যা ভাতার হার (টাকায়) বার্ষিক বাজেট
  • ১৯৯৮-৯৯ চার লক্ষ তিন হাজার ১১০ জন জনপ্রতি মাসিক ১০০ টাকা ৪০.৩১ কোটি টাকা
  • ২০০৫-২০০৬ ৬ লক্ষ ২৫ হাজার জন জনপ্রতি মাসিক ১৮০ টাকা ১৩৫ কোটি টাকা
  • ২০০৯-১০ নয় লক্ষ বিশ হাজার জন জনপ্রতি মাসিক ৩০০ টাকা ৩৩১.২০ কোটি টাকা
  • ২০১৬-২০১৭ এগারো লক্ষ পঞ্চাশ হাজার জন জনপ্রতি মাসিক ৫০০ টাকা ৬৯০ কোটি টাকা
  • ২০২৩-২০২৪ পঁচিশ লক্ষ ৭৫ হাজার জন জনপ্রতি মাসিক ৫৫০ টাকা ১৭১১.৪০ কোটি টাকা

বিধবা ভাতা কর্মসূচির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য?

১৯৯৮ থেকে ৯৯ অর্থবছরে বিধবা ভাতা কর্মসূচি প্রণয়নের মূল লক্ষ্যগুলো নিচে তুলে ধরা হলঃ

  • আর্থিক অনুদানের মাধ্যমে বিধবা নারীদের মনোবল জোরদার করা।
  • বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা নারীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও সামাজিক নিরাপত্তা বিধান করা।
  • পরিবার ও সমাজে বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা নারীদের মর্যাদা বৃদ্ধি করা।
  • অসহায় নারীদের চিকিৎসা সেবা ও পুষ্টি সরবরাহ নিশ্চিত করতে আর্থিক সহায়তা প্রদান।

শেষকথা

আমি আশাকরি আমাদের এই আর্টিকেলটি আপনি সম্পূর্ণ বুঝতে পেয়েছেন। এবং আপনি এই আর্টিকেলটি পড়ে অনেক কিছু জানতে পেরেছেন। এরকম জানা অজানা তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইট এর সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ

Sharing Is Caring:

এই ওয়েবসাইটি মূলত প্রযুক্তির খবর, ব্যাংক ও বিমা, পড়াশোনা, টিপস এন্ড ট্রিকস, ভিসার খবর, স্বাস্থ্য টিপস ও অনলাইন ইনকাম সম্পর্কিত তথ্যের বিরাট একটি প্ল্যাটফর্ম।

Leave a Comment